গ্রাফিকস ডিজাইনার হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করবেন, স্বপ্ন অনলাইনে ভাল ক্যারিয়ার গড়বেন। অনেক আয় করবেন। যেহেতু ইনকাম হবে অনেক, সেজন্য শিখতে গিয়ে ইনভেস্টও করলেন প্রচুর। কারন ভাল কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ শিখতে হলে খরচটাও বড় পরিমানে করতে হয়। কাজ শিখলেই কি আপনার জন্য আয় নিশ্চিত হয়ে গেল? আসলে যখন কাজ শিখেছেন, তখন শুধু সফটওয়্যারের টুলস ব্যবহার শিখেছেন কিন্তু ডিজাইন শিখেননি।
পোস্টটা লেখার কারণটি উল্লেখ করলে হয়ত পোস্টটির গুরুত্ব বোঝা সহজ হবে। সেজন্য উল্লেখ করছি। ক্রিয়েটিভ আইটিতে যে কোন কোর্সের সাথে আমরা আউটসোর্সিং কোর্স ফ্রি করিয়ে থাকি। গ্রাফিকস ব্যাচের সেই ফ্রি আউটসোর্সিং কোর্সের ক্লাশ নিতে গিয়ে দেখেছি, কেন সবাই ইচ্ছা থাকা স্বত্তেও ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে সফল হচ্ছেনা। তাদেরকে ক্যারিয়ার বিষয়ে গাইড লাইন দেওয়ার পরিকল্পনা থেকেই মূলত এ লেখার টপিকসটি মাথাতে এসেছে। আশাকরি , সবার জন্য কাজে লাগবে এটি।
গ্রাফিকস ডিজাইনার হিসেবে সফল ক্যারিয়ার গড়ার জন্য যে বিষয়ের প্রতি নজর দিতে হবে...
১। অভিজ্ঞ কোন ব্যাক্তি কিংবা অভিজ্ঞ কোন প্রতিষ্ঠান হতে গ্রাফিকস প্রশিক্ষণ নিতে হবে।২। আপনার কাজের মানের (ক্রিয়েটিভিটি) উন্নতি
৩। নিজের ডিজাইনের কাজসহ ভাল মানের পোর্টফলিও তৈরি।
৪। ডিজাইনার হিসেবে নিজের পরিচিতি (ব্রান্ড) তৈরি।
এ ৪টি বিষয়ে সফল হলেই গড়তে পারবেন একটি সফল ক্যারিয়ার।
১নং বিষয়টি আমার আজকের পোস্টে আলোচনা করবনা। কাজ শিখতে পারেন অনলাইন থেকে। তবে সেক্ষেত্রে শিখতে দেরি হয়ে যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে ভাল শিখা সম্ভব হয়না। কারও কাছ থেকে ব্যক্তিগতভাবে সরাসরি কিংবা কোন ভাল প্রতিষ্ঠান (বাংলাদেশে এ মুহুর্তে গ্রাফিকসের কাজ শিখার জন্য সেরা প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটিভ আইটি ইন্সটিটিউট) হতে কাজ শিখতে পারেন। সেইক্ষেত্রে যার কাছ থেকে শিখবেন, তার নিজের করা ডিজাইনগুলো আগে দেখে নিবেন এবং অবশ্যই কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জেনে নিবেন।
কাজের মানের (ক্রিয়েটিভিটি) উন্নতির পদ্ধতিঃ
গ্রাফিকসে কাজে ক্রিয়েটিভিটি সবচাইতে বড় বিষয়। খুব কম মানুষই আছে, যারা জন্মগতভাবে অনেক ক্রিয়েটিভ। বেশিরভাগকেই সাধনা করে ডিজাইন সেন্স বৃদ্ধি করতে হয়। এ সাধনা হচ্ছে, বেশি বেশি করে ভাল ডিজাইন দেখা। হুম, এটা ঠিক যে, ভাল ভাল ডিজাইন দেখলে ক্রিয়েটিভিটি বাড়ে। কিন্তু এটাও বাস্তব সত্য, শুধু দেখলেই ভাল কনসেপ্ট তৈরি হয়ে যায়না। কোন প্রজেক্টে কাজ করলে, সেই প্রজেক্টটি সম্পন্ন করার জন্য যদি ডিজাইন দেখা হয়, আর সাথে সাথে সেগুলো থেকে পাওয়া কনসেপ্ট দিয়েই ডিজাইন প্রজেক্টটি সম্পন্ন করা হয়, তাহলে কনসেপ্ট বৃদ্ধি পাবে খুব দ্রুত। আর সেজন্য ডিজাইন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আয় সম্পর্কিত মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করতে পারেন। এরকম দুটি মার্কেটপ্লেসের নাম হচ্ছেঃ 99designs.com, freelancer.com/contest/এ টাইপ মার্কেটপ্লেসগুলোর সুবিধা হচ্ছে,
- এখানে আপনার প্রোফাইল নতুন কিংবা পুরানো, এভাবে কোন মানদন্ড নেই। নতুন কিংবা পুরানো যে কেউ প্রতিযোগিতাতে অংশগ্রহন করতে পারে, এবং সবারই জিতার সমান সম্ভাবনা থাকে।
- প্রতিযোগিতাতে অংশগ্রহনকারী অন্যদের ডিজাইনও দেখার সুযোগ থাকার কারনে নিজের ভিতর ডিজাইন কনসেপ্ট তৈরি হবে।
- যদি এখানে কোন ডিজাইনে জিততে পারেন, তাহলে অন্য যেকোন মার্কেটপ্লেসগুলো থেকে বেশি আয় করা যায়। যেমন, ওডেস্কে একটি লোগো ডিজাইনের কাজ করলে পাওয়া যায় ২৫-৫০ ডলার, অন্যদিকে 99designs.com এ একটি লোগো ডিজাইন প্রতিযোগিতাতে জিতলে পাওয়া যায় ৩০০ ডলার।
ডিজাইন প্রতিযোগীতার সাইটগুলোতে আয় বেশি হলেও সেটাকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেওয়া সম্ভবনা। কারন আপনি অনেকগুলো প্রতিযোগিতা জিতলেও প্রতিটি প্রতিযোগিতাতে আপনাকে নতুন হিসেবেই ধরা হবে। এসব প্রতিযোগিতার সাইটগুলোতে কাজ করলে ডিজাইন কনসেপ্ট অনেক বাড়ে, সাথে ব্যাংক ব্যালেন্সটাও স্মার্ট হয়। কিন্তু সবসময় জিতবেন কিংবা বহুদিন যাবৎ কাজ করতে পারবেন, এরকম নিশ্চয়তা দেওয়া যাবেনা। ডিজাইন কনসেপ্ট তৈরির জন্য এ ধাপটির ভাল বিকল্প আর কিছু হতে পারেনা। ডিজাইন কনসেপ্টটি তৈরি যেহেতু এ ধাপের মূল উদ্দেশ্য, সেজন্য এ ধাপে পিএসডি টেমপ্লেট ডিজাইন প্রতিযোগিতাতে অংশগ্রহন করলে সবচাইতে ভাল উপকৃত হবেন। এখানে কমপক্ষে ১৫টা প্রতিযোগিতাতে অংশগ্রহনের পর নিজেকে ডিজাইনার হিসেবে আবিস্কার করতে পারবেন। এর আগ পযন্ত ছিলেন গ্রাফিকস সফটওয়ারের টুলসের ব্যবহারকারী। মনে রাখবেন টুলস ব্যবহার জানলেই ডিজাইনার হওয়া যায়না। ডিজাইনার হতে হলে অবশ্যই সাধনা করতে হবে।
ডিজাইনার হিসেবে ভাল মানের পোর্টফলিও প্রস্তুত
কমপক্ষে ১০ টি প্রতিযোগিতাতে অংশগ্রহন ছাড়া এ পর্বে প্রবেশ না করার পরামর্শ দিব। চাইলে ক্রিয়েটিভিটি তৈরি এবং পোর্টফলিও তৈরির কাজ একই সাথে চালাতে পারবেন। এ ধাপে কাজ করবেন Graphicriver.net এ। এ সাইটটি আপনার পোর্টফলিও হিসেবে বিভিন্ন জায়গাতে গ্রাফিকসের কাজ পেতে সাহায্য করবে। এ সাইটটিতে আন্তজার্তিক স্ট্যান্ডার্ডের ডিজাইন তৈরি করে সেখানে সাবমিট করতে হয়। যদি অ্যাডমিন আপনার ডিজাইনটি অ্যাপ্লুভ করে, তাহলে সেই সাইট হতে যতবার আবার ডিজাইন বিক্রি হবে ততই আপনার আয়। সারাজীবন ধরে বিক্রি থেকে আয় করতে পারবেন। বিক্রি বৃদ্ধির জন্য সোশ্যাল মিডিয়া সাইট গুলোতে ক্যাম্পেইন চালান। বিশেষ করে ফেসবুক, টুইটার, লিংকডিন, রেডিট, স্টাম্বলআপন সাইটকে ব্যবহার করুন। আরও বেশি বিক্রি বৃদ্ধি করতে চাইলে বিভিন্ন ফোরাম, বিশেষ করে (warriorforum), বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল ব্লগ এবং ইউটিউবকে ব্যবহার করতে পারেন সঠিকভাবে।এ সাইটটি আপনাকে ভবিষ্যতের গ্রাফিকস ডিজাইনার হিসেবে চাকুরী পেতে, ওডেস্কে-ইল্যান্স মার্কেটপ্লেসগুলোতে বিড করে কাজ পেতে, পিপলপারআওয়ার, ফাইবারে কাজ পেতে সাহায্য করবে।
সেই সাথে মার্কেটপ্লেসগুলোর থেকে বাইরে সরাসরি কাজ পেতেও এটি পোর্টফলিও হিসেবে কাজ করবে। লোকালটি যদি গ্রাফিকস ডিজাইনার হিসেবে চাকুরী পেতে চান, সেক্ষেত্রেও সিভিতে এখানের পোর্টফলিওর লিংকটি দিতে পারেন।
তবে মনে রাখা দরকার, ডিজাইনার হিসেবে পোর্টফলিও তৈরির জন্য এমন ক্যাটাগরির কাজ ডিজাইন করুন, যাতে লেখা, ব্যাকগ্রাউন্ড, ইমেজ ডিজাইনের প্রয়োজন হয়।
যেমনঃ ১। পিএসডি টেমপ্লেট ডিজাইন-২ টি
২। ব্রুশিয়ার ডিজাইন -১টি
৩। ফ্লাইয়ার ডিজাইন- ৩টি
৪। ওয়েব ব্যানার – ৩টি
৫। বিজনেস কার্ড ডিজাইন – ৩টি
99designs.com এর জন্য করা আপনার নিজের ডিজাইনগুলো, যেগুলো প্রতিযোগিতাতে জিততে পারেনি, সেগুলোকেও গ্রাফিকসরিভারে আপলোড করতে পারেন।
গ্রাফিকস ডিজাইনার হিসেবে সফল ক্যারিয়ার গড়ার জন্য কিছু দরকারী Tips
Reviewed by Unknown
on
10:42:00 PM
Rating:
Reviewed by Unknown
on
10:42:00 PM
Rating:

No comments: